রিলিজ হলো Iphone 15 এবং Iphone 15 pro, কি কি থাকছে এতে?

অবশেষে অনেক অপেক্ষার পর, অনেক গুজব শোনার পর রিলিজ হলো Iphone 15 সিরিজের ফোন। আজকে আমরা Iphone 15 সিরিজের ডিজাইন নিয়ে কথা বলব, পারফম্যান্স নিয়ে কথা বলব, ক্যামেরা নিয়ে তো বলতেই হবে। তো চলুন শুরু করা যাক।

Contents

Design

ডিজাইন এর কথা বললে, Iphone 13,14  এবং 15 মোটামুটি প্রায় একই। তেমন কোনো পরিবর্তন দেখা যায় না। তবে মেজর যে জিনিসটা চেন্জ হয়েছে সেটা হলো এই Iphone 15 এ ডায়নামিক আইল্যান্ড। এই ডায়নামিক আইল্যান্ড টা আগের একটা প্রো ফিচার ছিল, তবে এখন এটা নরমাল ভ্যারিয়েন্ট এই পাওয়া যাবে। ডায়নামিক আইল্যান্ডের সাহায্যে অভারঅল ইউজার এক্সেপেরিয়েন্স অনেক ভালোই পাওয়া যাবে। ডেইলি অনেক কাজ ম্যানেজ করাও অনেক সুবিধাজনক হবে।

এতে বড় আরেকটি চেন্জ হলো এর ম্যাটেরিয়াল। এবার আইফোনের পিছনে অনেক স্মুথ আগের গুলোর চেয়ে। তাছাড়াও এবার হাতে ধরলে একটু প্রিমিয়াম প্রিমিয়াম ফিল পাওয়া যাবে। কারন এটা এবার Titanium দিয়ে বানানো হয়েছে। যাতে ওজন একটু কমে এবং আরো মজবুত হয়।

আর টাইটেনিয়াম তাও Grade 5, যেটা বেশি স্ট্রং ও বেশি হালকা।

Screenshot from Apple’s iPhone 15 pro announcement live

আর আরেকটি গুরুত্বপুর্ন যে জিনিসটি জানানো প্রয়োজন তা হলো এর চার্জিং সিস্টেমের পরিবর্তন। অবশেষে অনেক অপেক্ষা ও ঝামেলার পর এপেল বাধ্য হলো টাইপ সি পোর্ট ব্যবহার করতে। এখন যেকোনো টাইপ সি চার্জার দিয়েই চার্জ করা যাবে আইফোন যা কিছুদিন আগে স্বপ্নের থেকে কম ছিলোনা।

আইফোনের আরেকটি ইউনিক ফিচার হলো মিউট বাটন। ফোনের সাইডে পাওয়ার বাটনের ওপরে একটু ছোট মিউট বাটন থাকে যেটা ওপরে বা নিচে করে সাইলেন্ট বা জেনারেল মোড অন করতে হয়। তবে এবার এর জায়গায় থাকবে একটি প্রেসেবল একশন বাটন। এর সাথে মিউট তো করাই যাবে তার সাথে আরো অনেক কিছুই করা যাবে যেমন নোটিফিকেশন অন অফ, ডার্ক মোড, ক্যামেরা আরো অনেক কিছূই করা যাবে। আরো এমন বলা হয়েছে যে এই টা কাস্টমাইজেবেল। মানে আমি যেটা চাইবো সেটাই দিতে পারব। যেমন চাপ দিলে ক্যামেরা অন হবে/ ফেসবুক অন হবে, আমার ইচ্ছা।

এবার ফোনের বেজেল টা আরেকটু পাতলে করে দিয়েছে আগের সিরিজের ফোনগুলোর তুলনায়।

Display

ডিসপ্লে এর দিক থেকে Iphone 15 আর Iphone 15 pro দুইটা আলাদা সাইজে বের হচ্ছে। একটি হলো 6.1 Inchi আরেকটি হলো  6.7 Inchi। তবে এখনো এতে 60hz রিফ্রেশ রেট ই পাওয়া যাবে। এটা চেন্জ করেনি। তবে প্রো সিরিজে মানে Iphone 15 pro তে 120hz রিফ্রেশ রেট পাওয়া যাচ্ছে। তো ডিসপ্লেও থাকছে টপ কোয়ালিটি এর।

তার সাথে আগের মতো Super retina XDR, Oled Display তো থাকছে, তবে এবার ব্রাইটনেস টা এবার বাড়ানো হয়েছে। এবার এটা 2000 neats পর্যন্ত আছে, তো রোদের মধ্যে ব্যবহার করতে কোনো অসুবিধাই নেই। তবে এটা ব্যবহার করা যাবে ফোনের তাপমাত্রার ওপর। তো সবসময় একদম ফুল ব্রাইটনেস তো থাকবেনা।

Processor

তবে প্রসেসর এর দিক থেকে কোনো এদিক ওদিক নেই। একদম টপ কোয়ালিটির প্রসেসর এপেল বায়োনিক 17 pro। যা বর্তমানের ফাস্টেস্ট 3NM এর চিপ তার সাথে ৬কোর এর প্রসেসর। গেমিং এ কোনো গেম এই ল্যাগ করবেনা এমন ও শোনা যাচ্ছে। স্মুথলি যেকোনো গেম হাই গ্রাফিক্স এ চলে যাবে।

এর প্রসেসর এ কি কি করা যাবে একটু ধারনা দেয়, এতদিন আমরা রে ট্রেসিং দেখতাম গ্রাফিক্স কার্ডে যেটা কম্পিউটারে হতো। যা আমরা এখন 15 Pro তে পাব “Hardware Accelareted Ray Tracing”।  যেটা অফ থাকলে এমন –

আর অন থাকলে এমন –

মানে আপনি যদি কোনো গেম খেলার সময় আপনি কোনো ঘরে লাইট জ্বলছে দেখেন তাহলে সেই লাইট টা কোনো ঘরে কেমন ভাবে কতোটা রিয়েলিস্টিক ভাবে স্প্রেড হচ্ছে সেটা ডিপেন্ড করে রে ট্রেসিং এর ওপর। তো এটি যত ভালো তত রিয়েলিস্টিক লাগে গেইম। এটি কম্পিউটারে RTX বলেও অনেক পরিচিত।

আর আগের সিরিজে একটা স্যাটেলাইটের ফিচার ছিল যেখানে কোনো সমস্যা হলো স্যাটেলাইটের মাধ্যমে যোগাযোগ করা যেতো। এটার ই আরেকটা ভ্যারিয়েন্ট এনেছে যার নাম দিয়েছে  “Roadside Assistance via satellite”। মানে ফিচার সেম ই। জাস্ট নাম আলাদা।

আর এনাউন্সমেন্ট অনুযায়ী এর প্রসেসর এতোই পাওয়ারফুল যে এতদিন যে যে গেম গুলো পাবলিশ হয়েছে সেগুলো তো চলবেই তার সাথে সাথে এতদিন পিসি বা কনসোলে যে গেইম গুলো চলতো সেগুলা এখন এতে খেলা যাবে। যার মধ্যে অলরেডি ঘোষনা হয়েছে Residential Evil যা অনেক জনপ্রিয় এবং অনেক হাই গ্রাফিক্স এর পিসি গেইম। এখন Residential Evil, Assasine Creed ইত্যাদি আরো অনেক গেইম ই এখন এই ফোনেই পাওয়া যাবে ২০২৪ এর মধ্যেই। এখনো ডেভেলপমেন্ট চলছে। এরা কোনো ফোন গেইম বানিয়ে দিবেনা কিন্তু, একচুয়াল যে পিসি / কনসোলের গেইম ওটাই খেলা যাবে। তো সেক্ষেত্রে বলা যায় পিসি / কনসোল এর অনেক গেইম ই খেলা যাবে এতে। হয়তো এমন ও হতে পারে GTA V এর মতো গেইম ফোনে খেলতে পারব।

Camera

প্রসেসর এর মতোন সাংঘাতিক ইমপ্রুভ হয়েছে ক্যামেরা তে। এবার ফাইনালি আইফোনে ১৪ মেগা পিক্সেলের ক্যামেরা পাওয়া যাচ্ছে। এতে যে ২ টা ক্যামেরা আছে তার একটাতে 2x telephoto lense আছে। আরেকটা হলো মেইন ক্যামেরা যেটার সাহায্যে অনেক জোস লেভেলের পোট্রিয়েট ছবি তোলা যাবে। এনাউন্স মেন্ট এ এপেল বলেছে এই পোট্রিয়েট মোড করে ওরা নেক্সট লেভেলে নিয়ে যাবে এবার।

Screenshot from Apple iPhone 15 announcement live video

তাছাড়া নতুন আরেকটি ফিচার এসেছে যেটা হলো যেকোনো নন পোট্রিয়েট ফটোকেই পোট্রিয়েটে কনভার্ট করা যাবে। এবং এই ছবির ফোকাস ও পরে চেন্জ করা যাবে। অনেক ক্ষেত্রে এমন হয় যে ২ জনের ছবিতে একজনের ওপর ফোকাস থাকে যেটা এখন ফিক্স করা যাবে। তাছাড়াও এতে 4k তে 60 FPS এ ProRes ভিডিও করা সম্ভব যা এপেল বলেছে একটি রিয়েল সিনেমা শ্যুট করা সম্ভব এটা দিয়ে।

DSLR এর একটা ফিচার আছে যে কোনো ভিডিও রেকর্ড করা হলে তা USB এর মাধ্যমে ডিরেক্ট কোনো হার্ডডিস্ক এ সেভ হবে। আর এই 4k ভিডিও এর সাইজ অনেক হয় বলে বেশির সময় Storage Full এলার্ট আসে। তবে এখন  এই সমস্যার সমাধানে DSLR এর মতো USB এর মাধ্যমে সরাসরি আলাদা Hard disk এ ভিডিও স্টোর করা যাবে। তাউ USB Type C দিয়েই। আর শুধু তাই নয়, মাইক্রোফোন সহ আরো অনেক কিছূই ব্যবহার করা যাবে এই Type C USB port দিয়ে।

পরিশেষে

আমি চেষ্টা করেছি Iphone 15 announcement Video থেকে যতদূর সম্ভব ডিটেইলস কালেক্ট করে এখানে লেখার । আশা করি ভালো লেগেছে। ভালো লাগলে একটা কমেন্ট তো করাই যায়। ধন্যবাদ এই পর্যন্ত পড়ার জন্য।

Leave a Comment