Student life এ যে ১০ টি স্কিল আপনার থাকা বাধ্যতামূলক

স্টুডেন্ট লাইফ বীজ বপনের সময়, এ সময় জ্ঞান অর্জন তো করতেই হবে, তবে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার কিছু ত্রুটির কারনে যে জিনিস গুলো নিজে থেকে শিখতে হবে তার একটি লিস্ট এই আর্টিকেলে আমি দিতে চলেছি। স্টুডেন্ট লাইফে যে শুধু পড়া লেখা করতে হবে, প্রাতিষ্ঠানিক পড়ালেখার ওপর ভিত্তি করে থাকলে জীবনে কখোনোই সফল হওয়া সম্ভব নয় বাংলাদেশে।

Contents

ইনকাম এবং পার্সোনাল মানি ম্যানেজমেন্ট

 আপনি কোটিপতির সন্তান হলেও- স্টুডেন্ট লাইফে আপনাকে কিছু না, কিছু ইনকাম করতেই হবে। নিজের স্কিল, নিজের মেধা, নিজের শ্রম দিয়ে অল্প হলেও ইনকাম করার চেষ্টা করতে হবে। এতে রেস্পন্সিবিলি কিভাবে নিতে হয়। অন্যকে কিভাবে সার্ভ করতে হয়। কাজ দিয়ে হ্যাপি রাখতে হয় সেটা শিখবে। এই ইনকাম টিউশনি দিয়ে, কোচিং সেন্টারে ক্লাস নিয়ে, পার্টটাইম চাকরি, ভিডিও এডিটিং, ডিজাইন, ওয়েবসাইট তৈরি, কনটেন্ট রাইটিং, এফিলিয়েট মার্কেটিং, এফ-কমার্স, ডিজিটাল মার্কেটিং, বা অন্য কোন কিছু দিয়ে হতে পারে। তারপর নিজের পকেট খরচ নিজে চালানোর চ্যালেঞ্জ নিবে। এতে পার্সোনাল ফাইন্যান্স এবং মানি ম্যানেজমেন্ট অনেক গুরুত্বপূর্ণ লেসন ঠেকে ঠেকে শিখবে। যেটা কোন ভার্সিটি আপনাকে শেখাবে না।
.

বেসিক কমিউনিকেশন স্কিল

আপনি দেশের সেরা ভার্সিটি বা সবচেয়ে খারাপ কলেজে পড়ুন না কেন। ইংরেজি নরমাল কথা বার্তা চালিয়ে যাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতেই হবে। নিজের সম্পর্কে বা কোন একটা টপিক সম্পর্কে এক দেড় পাতা ইংরেজিতে লেখার যোগ্যতা তৈরি করতে হবে। কেউ ইংরেজিতে একটা ইমেইল বা মেসেজ দিলে সেটার রিপ্লাই দিতে জানতে হবে। ইউটিউব বা অন্য কোথাও ইংরেজি টিউটোরিয়াল দেখে বুঝতে পারার সামর্থ্য লাগবেই লাগবে। প্রচুর ফ্রি কোর্স আছে ইংরেজিতে। সেগুলা দেখে বুঝতে এবং কাজে লাগানোর এবিলিটি তৈরি করতে হবে।

ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট/ লিডারশীপ

বন্ধুদের ঘুরতে যাওয়া হোক কিংবা ক্যাম্পসে কোন ইভেন্ট হোক- সেটা ইফতার পার্টি, বৈশাখী মেলা, rag পার্টি, জব ফেয়ার, এলামনাই রিউনিয়ন। যেটাই হোক আপনাকে ইভেন্টের একজন মেইন অর্গানাইজার হতেই হবে। তাহলে আপনি বুঝতে পারবে কিভাবে বিভিন্ন ধরনের মানুষ হ্যাডেল করতে হয়। কিভাবে বাজেট করতে হয়। প্লানিং করতে হয়। মানুষের কাজ থেকে হেল্প আদায় করতে হয়। ১৫-২০ টা জিনিস একসাথে কম্বাইন করার প্রাকটিক্যাল লিডারশীপ ট্রেনিং ফ্রি ফ্রি আর কোথাও পাবেন না।
আরেকটু বেশি কনফিডেন্ট হতে চাইলে মিনিমাম ৫০জন মানুষের সামনে বক্তৃতা, ডিবেট, উপস্থাপনা বা নাচ, গান/নাটক কিছু পারফর্ম করার চেষ্টা করবেন। এতে আপনাকে পাবলিকের সামনে দাঁড়ানোর ভয় কেটে যাবে।

গুগল সার্চ এবং chatGPT

কিভাবে ইন্টারনেট থেকে দরকারি জিনিস খুঁজে বের করবে সেই এবিলিটি আপনাকে তৈরি করতে হবে। লেটেস্ট যে টেকনোলজি (chatGPT ) সেটা ইউজ করা জানতে হবে। যাতে আপনার ফিল্ডের কোন টপিক এর রিসার্চ বা অন্য ফিল্ডের কোন কিছু খুঁজে বের করতে দিলে সেটা খুঁজে বের করতে পারো। গুছিয়ে একটা রিপোর্ট তৈরি করতে পারো। দরকার হলে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন বা গুগল স্লাইড দিয়ে প্রেজেন্টেশন বানিয়ে ফেলতে পারলে তো কোন কথা ই নাই।
আর আপনি যেই লাইনেই পড়ুন না কেন। কিছু না কিছু সফটওয়্যার আপনার লাগবেই। সেগুলা কিভাবে ইউজ করে। কিভাবে কাজে লাগায় সেটা জানতেই হবে। দরকার হলে ইউটিউবে সার্চ দিয়ে টিউটোরিয়াল খুঁজে বের করে শিখে ফেলবেন।

এরিয়া অফ ইন্টারেস্ট

আপনি যে সাবজেক্টেই পড়েন না কোন। যে ফিল্ডেই পড়ুন না কেন। আপনাকে সেই ফিল্ডের যেকোন একটা এরিয়াতে আপনার টেক্সট বইয়ের/ ক্লাসের পড়ার বাইরে বেশি জানতে হবে। সেটার জন্য আপনি এক্সট্রা বই পড়তে পারেন। নিজের ভিতরে কিউরিসিটি গ্রো করতেই হবে। তারপর যা যা শিখছেন সেগুলা একটা একটা করে সামারি লিখতে হবে। সেই সামারি কোথাও না কোথাও পাবলিশ করার চেষ্টা করবেন। ডিপার্টমেন্টের ম্যাগাজিন। সেটাও না পারলে বিশ্বের সেরা পাবলিশার ফেইসবুকে পাবলিশ করে দিবেন। দুই একজন বন্ধু টিটকারি মারলেও আপনি কী কী শিখছেন সেটা ফেইসবুকে পোস্ট করে দিবেন।

বেস্ট ফ্রেন্ড

আপনার একজন বেস্ট ফ্রেন্ড বানাতেই হবে। একটা ফ্রেন্ড সার্কেল থাকবে। তবে ফ্রেন্ড সার্কেলের মধ্যে বা বাইরে আপনার একজন বেস্ট ফ্রেন্ড থাকবেই। যার সাথে মিলে আপনি অনেক কিছু করবেন। অনেক জায়গায় যাবেন। দুজনের ইন্টারেস্ট লেভেল কাছাকাছি থাকবে। একজন আরেকজনকে হেল্প করবে। এই ক্লোজনেস আপনাকে ডাউন টাইমে হেল্প করবে। ফিউচার ঠিক করতে হেল্প করবে। কারণ সব বন্ধুর সাথে সব শেয়ার করা যায় না। বেস্ট বাডি না থাকলে- ইয়াং লাইফে নিজের ভিতরের ইমোশনাল অত্যাচারটা বড্ড রকমের বেশি হবে।

নেটওয়ার্কিং

আপনি যে ফিল্ডে কাজ করতে চান। সেই ফিল্ডের কমপক্ষে দশজনের সাথে আপনার কানেকশন থাকতে হবে। তারা হতে পারে আপনার সিনিয়র। অন্য ভার্সিটির সিনিয়র বা অন্য কোথাও থেকে পাশ করা প্রফেশনাল হতে পারে। দেশের বাইরের কেউ হতে পারে। হয়তো কোন ওয়ার্কশপ বা সেমিনারে এ গিয়ে তাদের সাথে পরিচয় হইছে। তাদের সাথে আপনার যোগাযোগ থাকবে। তারা জানবে আপনি কোন কোন জিনিসে ভালো। আপনার প্যাশন কি। ফিউচার প্ল্যান নিয়ে তাদের সাথে ডিসকাস করবেন

Build Your resume

 এত বছর পড়াশুনার পর যদি দেড় পাতা রেজুমি লেখার মেটেরিয়াল আপনার লাইফে না থাকে তাইলে আপনি কি করলেন? আপনাকে এক্সট্রা কারিকুলার এর সাথে জড়িত থাকতেই হবে। যেকোন একটা অর্গানাইজেশনের সাথে। সেরকম কোন অর্গানাইজেশন না থাকলে আপনি এবং আপনার বন্ধুরা মিলে একটা দিয়ে ফেলবেন। সিনিয়র ভাইদের কাছ থেকে তাদের সিভি/রেজুমি জোগাড় করে ফেলবেন। দরকার না থাকলেও সেকেন্ড ইয়ারে/থার্ড ইয়ারে আপনার একটা রেজুমি বানিয়ে ফেলবেন। LinkedIn এ গিয়ে দুই একটা জব সার্কুলার দেখে ঠিক করবে তারা কী কী চায়। তাহলে বুঝতে পারবে কোন কোন জায়গায় গ্যাপ আছে। তখন সেই গ্যাপগুলার এরিয়াতে ইমপ্রুভ করে ফেলবে।

এক্সটা নলেজ

পাঠ্য বইয়ের বাইরের জগতে আপনাকে হানা দিতেই হবে। সেটা হতে পারে কিছু বিখ্যাত বই পড়ে (বাংলায় বা ইংরেজিতে)। উপন্যাস বা আত্ন উন্নয়নমূলক বা অন্য কোন ক্যাটাগরির বই। হতে পারে কিছু অস্কার বিজয়ী সিনেমা। মোস্ট পপুলার TED talks গুলা দেখলেন। অন্য ডিপার্টমেন্টের ছেলেপুলেরা কী কী নিয়ে পড়তেছে সেটা নিয়ে মাঝে মধ্যে গল্প করলা। তাইলে আপনি আপনার জগতের বাইরের কিছু জিনিস সম্পর্কে অবগত হলে। এর মধ্যেই হয়তো আপনি আপনার ইন্টারেস্ট খুঁজে পাবেন। সেটাতে আরো ফোকাস করলে সেই ফিল্ডে সিরিয়াস একটা স্কিল তৈরি করে ফেলতে পারলেও তো কথা ই নাই।

নিজেকে গাইড করার এবিলিটি

স্কুল বা কলেজ পার হওয়ার আপনি ইন্ডিপেন্ডেন্ট । এইখানে ফ্যামিলি আপনাকে গাইড করবে না। তাই নিজের টাইম ম্যানেজমেন্ট, ইমোশন ম্যানেজমেন্ট, রিলেশন ম্যানেজমেন্ট এইগুলা নিজের ভিতরে ডেভেলপ করতে হবে। কোন একটা রুটিন বানিয়ে সেটা ফলো করার এবিলিটি। কোন টার্গেট সেট করে সেটার পিছনে লেগে থাকার সামর্থ তৈরি করতে হবে। অপরিচিতদের সাথে কথা বলতে পারা। ধীরে ধীরে প্রফেশনাল লাইফের দিকে যাওয়া। লাইফ গুছানোর কথা চিন্তা করতে হবে।

Leave a Comment