বর্তমান যুগ তথ্য প্রযুক্তির যুগ। তথ্য প্রযুক্তির অবদান সবক্ষেত্রে সুস্পষ্ট। সকালের ঘুম থেকে উঠে দেশের সকল খবর হাতের মুঠোয় পাওয়া থেকে শুরু করে রাতে ঘুমানো পর্যন্ত তথ্য প্রযুক্তির প্রভাব রয়েছে। তবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এ. আই. আসার পর আমাদের অফিসিয়াল কাজে বা স্কিল ডেভেলপমেন্ট এবং এপ্লাই এও এর অবদান অনেক।
বর্তমানে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে অনেক সমালোচনা হচ্ছে, অনেকে তো ভাবছে এটি অনেক ডেভেলপার দের চাকরি হুমকির মুখে ফেলবে আরো অনেক কিছু। আজকের আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করব আসলেই কি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের জন্য কারো চাকরি এর ক্ষতির সম্ভাবনা আছে, যদি থাকে তাহলে কাদের আর কিভাবে, কিভাবে একে ব্যবহার করা যেতে পারে, কিভাবে এর ক্ষতি থেকে বাচা যেতে পারে।
Contents
আসলেই কি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের জন্য কারো চাকরি এর ক্ষতির সম্ভাবনা আছে?
আসলে এর উত্তর হ্যা বা না উভয় ই হতে পারে। সেটা ডিপেন্ড করে কি ধরনের কাজ, এবং ওই কাজে কোনো ব্যাক্তির পজিশন টা কি। এ. আই. বর্তমানে রাইটিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন, প্রোগ্রামিং, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, এপ ডেভেলপমেন্ট অর্থাৎ ডেভেলপমেন্ট এর সেক্টরগুলোতে বিপুল প্রভাব ফেলছে। উদাহরনের স্বরূপ বলা যায় অনেক ডেভেলপার রা তাদের কোড গুলো গিট হাবে হোস্ট করে। গিটহাবে প্রচুর কোড আছে। এ. আই. কে এসকল কোড দিয়ে ট্রেইনিং করানো হয়েছে।
একই ভাবে আরো অনেক ক্ষেত্রে অনেক অনেক ডাটা দিয়ে একে ট্রেইন করা হয়েছে বলেই এটি এত কিছু করতে পারছে। তবে মূল বিষয় হলো এটি খুব এডভান্স লেভেলের কাজ করতে পারেনা। যারা এসকল সেক্টরে এভারেজ বা বেসিক কাজ গুলোর ওপর ভিত্তি করে জব এ আছেন তাদের জব গুলি এর কারনে হুমকির মুখে পড়তে পারে। তাদের ক্ষেত্রে উত্তর হবে “হ্যা”।
যারা এসকল সেক্টরগুলোতে অনেক পারদর্শী বা এক্সপার্ট তাদের এক্ষেত্রে কোনো ভয় । তারা একে তাদের কাজগুলো সহজ করতে বা দ্রুত করতে ব্যবহার করতে পারবেন। অর্থাৎ তাদের ক্ষেত্রে উত্তর হবে “না”।
এর সঠিক ব্যবহার কিরকম হতে পারে
এর আগেও একবার যেটা বলেছি কোনো নির্দিষ্ট টপিকের ওপর কোনো কাজ দ্রুত করতে বা সহজ করতে এর ব্যবহার হতে পারে। যেমন আমি যদি ওয়েব ডেভেলপার এর দৃষ্টিকোন থেকে বলি তাহলে ধরুন আমি একটি ওয়েবসাইট বানাচ্ছি। এখন আমার সাইতে আমি একটা লগ ইন সিস্টেম বানাতে চাই। তাহলে আমি এই লগিন সিস্টেম এর ব্যাক এন্ড কোড টা জে.এস বা অন্য কোনো কোডে এ. আই. এর কাছ থেকে জেনারেট করে নিয়ে একটু মডিফাই করে ইউজ করতে পারব।
আবার যদি আমি কন্টেন্ট রাইটার এর দৃষ্টিকোন থেকে বলি তাহলে যে বিষয়ে কন্টেন্ট লিখব সে বিষয় সম্পর্কে এ. আই. কি জানে সেটা তার থেকে একবার জেনে নিলে আমার কন্টেন্ট লিখতে সুবিধা হবে।
আবার আমি যদি গ্রাফিক্স ডিজাইনার এর দিক থেকে ভাবি, তাহলে আমি যে বিষয়ে কোনো ডিজাইন করব সে বিষয়ে কয়েকটা ডিজাইন দেখলে আমার মাথায় আরো আইডিয়া আসবে। আমার ডিজাইনে আরো অনেক কিছু এড করতে পারব।
যদি এপ ডেভেলপার এর দৃষ্টিকোন থেকে ভাবি, মনে করুন আমার এপে একটা বাটন আছে। আমি সেটার অন ক্লিক লিসেনার সেট করতে চায় অর্থাৎ বাটনে ক্লিক করলে কোনো একটা রিসপন্স তৈরি হবে সেটার কোড আমি এ. আই থেকে নিয়ে আমার কোডে এড করতে পারব। এতে আমার কাজ দ্রুত হবে।
স্টুডেন্ট হিসাবে ভাবলে, কোনো একটা প্যারাগ্রাফ, বা কোনো প্রশ্নের উত্তর বা কোনো সমস্যার সমাধান করতে এ. আই. অনেক ভালো হেল্প করতে পারবে।
কি কি স্কিল থাকা জরুরি যা এ. আই. এর ক্ষতির দিক থেকে আপনাকে বাচাবে?
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের (AI) যুগে আপনার এমন কি কি স্কিল থাকা জরুরি যা আপনাকে AI-Proof করবে? এমন কি কিছু আছে যা AI রিপ্লেস করতে পারবে না?
নিচের লিস্ট থেকে মিলিয়ে নিন, এগুলোর মধ্যে কোনটা কোনটা আপনার মধ্যে আছে বা বিল্ড করতে চান। আল্টিমেটলি এগুলোই আপনাকে টিকিয়ে রাখবে
01- Emotional Intelligence
02- Critical Thinking
03- Creativity & Innovation
04- Ethical Considerations
05- Adaptability
06- Leadership
07- Cultural Understanding & Sensitivity
08- Communication Skills
09- Mentorship & Coaching
10- Design Thinking
আপনাকে এখানে যেকোনো টেকনিক্যাল স্কিলের সাথে, উপরের স্কিল গুলোও (বা যেকোনো একটা) মাস্টার করতে হবে, ফিউচারে AI-Proof থাকতে।
পরিশেষে
যখন প্রথম অটো টেক্সট কারেকশন সিস্টেম এসেছিল তখন এমন অনেক হইচই হচ্ছিল এটা নিয়ে যে ভবিষ্যতে এটি আরো অনেক কিছু করবে যা মানুষের জন্য ক্ষতিকর। ইতিহাসে এমন অনেক উদাহরন ই আছে যেখানে টেকনলোজি এমন রুপ দেখিয়েছে যাতে মনে হয়েছে এটি মানুষকে ছাড়িয়ে যাবে। তবে এখনো পর্যন্ত এটি মানুষকে ছাড়াতে পারেনি। আর আমার মতে এই দশকে পারবেওনা।
কারন হলো মানুষের মস্তিষ্ক এসব টেকনলজির তুলনায় অনেক শক্তিশালি। আপনি যে সেক্টরেই কাজ করছেন সেখানে আপনি নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে স্কিল গেইন করার চেষ্টা করূন। এক্সপার্ট হন তাহলেই শুধু এ. আই না যেকোনো হুমকি থেকেই আপনার ক্ষতির সম্ভাবনা থাকবেনা।